অয়ন নিয়োগী
ওরা জাতের বিভেদ বুঝতো না, তাই হয়তো ভালোবেসে ফেলেছিল একে অপরকে। রুকসানা আর অনীক। ধর্ম আলাদা হলেও তাদের ভালোবাসা ছিল খাঁটি। কিন্তু পরিবার আর সমাজের চাপে এক হতে পারেনি ওরা। আনিক চলে যাচ্ছে আমেরিকা। এই শহর যার ছত্রে ছত্রে তাদের ভালোবাসার পরশ সেখানে সে রুপার থেকে আলাদা হয়ে থাকতে পারবে না। আজ তাই রুকসানাকে ডেকেছে কবরখানার উল্টো দিকের শিউলি গাছের নীচে। - জানিস আনি, বাবা আমার বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজছে। তুই ও তো বিদেশ চলে যাবি।(বলতে বলতে গলা ধরে আসে রুকসানার)- হ্যাঁ রে চলে যাচ্ছি। আমি এখানে আর থাকতে পারবো না রে। ভালো থাকিস তুই।- অনি তোর রু এর একটা কথা রাখবি রে। যেখানেই থাকিস তিন বছর পরে ঠিক এখানে আরেকবার আসবি রে।- বেশ, আসবো।(ব্যাস এইটুকু তাদের চোখের জলে ভেজে গাল। ফিরে আসে দুজনে)জীবনও গতি পায় নিজের। অনীক আমেরিকাতে বসে খবর পায় তার রু এখন অন্য কারোর। সব যোগযোগ ছিন্ন করে সে। কিন্তু রুকসানাকে দেওয়া কথা যে রাখতেই হবে। ঠিক তিন বছর পরে ফিরে আসে অনীক তার রু এর সাথে দেখা করতে। রুকসানার দেওয়া নীল পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে এসে দাঁড়ায় সেই কবরস্থানের উল্টো দিকে শিউলি ফুলের গাছটার নীচে। কিন্তু তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও কেউ আসেনি তার জন্য। অনীক বাড়ি ফেরে; ভাবে সে কতো বোকা তার রু তো এখন অন্য কারোর, সে তো তাকে ভুলবেই। ফিরে গেল আমেরিকা। শুধু অনীক একটু কমই জেনে ছিল। রু তার জন্য আজও সেখানেই অপেক্ষা করছে, এক বছর ধরে, আর হয়তো তার রু কেবল তারই প্রতীক্ষায় থাকবে। সামনে কবরস্থানে কবরে শুয়ে থেকে। ভালো থাকুক, ভালো থাকুক তাদের ভালোবাসা।