অয়ন নিয়োগী
সবার কাছে নিজের খারাপ থাকাটা আড়াল করতে করতে ভুলেই গেছি, আসলে কেমন আছি আমি?
আড়াল করাটা কেমন যেন আমাদের ধাতে দাঁড়িয়েছে, ভালো থাকতে না পারাটা, চোখের জল, বিনিদ্র রাতের ক্লান্তিগুলো স্নানের জলে ধুয়ে-মুছে একটা হাসি মুখ নিয়ে বেরিয়ে পড়ি, নতুন দিনের জন্য! প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা চাপ, ব্যস্ত সমাজের ভেঙে যাওয়া সম্পকের বিষ-বাষ্প, চাওয়া আর না পাওয়ার বিস্তর ফারাক; প্রতিনিয়ত খারাপ থাকার উপাদান জোগাচ্ছে এই সমাজে।
খারাপ লাগাগুলো শোনার একটা মানুষ কেবল একটা মানুষের যে বড়ো অভাব, নেই কেউ বলার মতো, "কি হয়েছে? আমি তো আছি।" বা এমন একটা বুক নেই যেখানে মাথা রেখে সব কিছু বলা যায়, ইচ্ছে মতো চোখের জল ফেলা যায়, তাই বোধহয় খারাপ লাগাটা মূল রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা সমাজটার।
হাসির মুখোশ পরে নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে থাকা, অফিসে পাশে বসা মানুষগুলো তো যান্ত্রিক হয়ে যায়নি এখনো। তাই খারাপলাগাগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, ছুঁয়ে যায় উঁচু ঘরের সিলিংটাকেও। বন্ধ ঘরের অন্ধকার গ্রাস করে সেই "হাসি মুখে থাকাটাকে।" আবার সকাল হয়, কিন্তু শেষ হয় অভিনয়ের পালা, আর "হাসি মুখ" রাখতে হয় না, কেমন আছিস?" - এর উত্তর দিতে হয় না ভালো আছি। শুধু খবরের কাগজের কোনো একটা কোনে জায়গা করে নেয়,"আত্মহত্যা করলো এক তরুণ বা তরুণী।" অথবা লোকের মুখে ঘোরে,"ওকে দেখে তো বোঝায় যায় নি ও তো হাসি মুখেই থাকতো।"
চাপা পড়ে যায় ঐ হঠাৎ চলে যাওয়া সেই "হাসি মুখটার" শেষ লেখা লাইনটা,"বাঁচার জন্য, চলে যাচ্ছি।"