সেলিনা খাতুন
রাত যে তখন হল অনেক
চাঁদ যে গেল ঢেকে,
আপন মনে চলল হেঁটে-
তখনও পা চার-চারটে।
বাকি তখন অনেক কথা,
কিছুই যে হয়নি জানা;
কতদিন পর দেখা তাদের
কিছুই যে হয়নি বলা।
পায়ের সাথে ঠোঁট যে তখন
চলছে অনবরত;
হাত যে তখন নানাভাবে-
ভঈিঁ করে একেক রকম।
অনেক দূূরই চলল তারা-
কেবল তখন হেঁটে হেঁটে,
মুখে তাদের হাসি ছিল,
হাতে যে তাদের হাত ছিল।
ছিল চর্ম দুটো হাতেই,
নখও ছিল সমমানের-
একের হাতে লাল ধাগা;
অন্যতে কালো কার বাঁধা।
হঠাৎ কোনো প্যাঁচার ডাকে
উঠলো কেঁপে দুজন ভয়ে,
একই সাথে হাঁক যে দিল-
গোপাল আর আল্লা বলে।
দু-পা তখন এগিয়ে যেতেই-
বাঁদুর তাদের পথ কাটলো,
ডানার ঝাপটায় ভয়ে তারা
ভারসাম্য তখন হারাই ফেলল।
পাশেই ছিল পুকুর যেটা
উলটে পড়লো তাতে তারা
এপাশ ওপাশ করলে বটেও
পারলো না উঠতে কোনোভাবেও।
মানব শরীর ছিল তাদের
দিলও তো একই রঙের-
কারোর মনে ছিল রাব্বা;
তো কারোরটাতে গোপালা।
মনে তাদের ভরসা ছিল-
ডাক দিলো তাই হাক ছেড়ে,
যাদের উপর আস্থা তাদের,
হাক দিলো তার নাম ধরে।
হঠাৎ এক শব্দ এল
জানা শোনা পুরোনো সে,
পুকুর পাড়ে পড়তে আলো-
মিটে গেল সন্দেহ।
যাদের তারা ডাকছিল-
ভরসা দিয়ে মনেতে,
সত্যিই কি এল সে-
বাঁচাতে তাদের আজ প্রাণে।
হাত যে এক এগিয়ে এল,
নীল সে আলোর মধ্য দিয়ে;
ভয়কে তখন মুছে ফেলে-
জীবনের সে জোগান দিতে।
কোনোভাবে উঠলো তারা-
দুই বন্ধু নিধি-নেহা,
ভয় যে তখন কেটেই গেছে
সামনে তাকে দাইড়ে দেখে।
কাঁধের উপর কয়েক তারা,
পরনে যার খাঁকি জামা,
বুকে বল অনেক যার
সে যে সত্যিই এক অবতার॥